ভার্মি কম্পোস্ট / কেঁচো সার

কেনো ব্যবহার করবেন কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট আসুন জেনে নিই….
কেঁচো সার একটি পরিবেশ বান্ধব উন্নত প্রাকৃতিক জৈব সার। ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) মাটির অণুজৈবিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, গাছের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদানের প্রায় সব গুলো উপাদান থাকায় গাছের দ্রুত বৃদ্ধি হয় । এতে জৈব পদার্থের পরিমাণ অন্য জৈবসারের তুলনায় অনেক বেশি থাকে, যা মাটির জন্য খুব উপকারী এবং মাটিতে পানির ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং মাটির তাপমাত্রা, আদ্রতা ও অম্লতা নিয়ন্ত্রণ করে । কেঁচো সার মাটির পিএইচের মাত্রা নিয়ন্ত্রণসহ মাটির বিষক্রিয়া দূর করে । এ সারের গুণাগুণ মাটিতে দীর্ঘদিন অবশিষ্ট থাকে বলে পরবর্তী সময়ে সারের পরিমাণ কম লাগে । কেঁচো সার ব্যবহারে অন্যান্য সার ব্যবহারের খরচ অনেক কম হয় । এই সারে জৈব পদার্থ, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সালফার, ম্যাগনেশিয়াম সহ অসংখ্য গুণ থাকায় রাসায়নিক সার ব্যবহারের তেমন কোন প্রয়োজন হয় না । ভার্মি কম্পোষ্টে গাছের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কয়েকটি এনজাইম ও হরমোন আছে যা গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ।
 
কেঁচো কম্পোস্টের উপাদান
কেঁচো কম্পোস্টে অন্যান্য কম্পোস্টের চেয়ে প্রায় ৭-১০ ভাগ পুষ্টিমান বেশি থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে একটি আদর্শ ভার্মিকম্পোস্টেঃ-
১.৫৭% নাইট্রোজেন,১.২৬% ফসফরাস,২.৬০% পটাশ, ০.৭৪% সালফার, ০.৬৬% ম্যাগনেশিয়াম, ০.০৬% বোরণ, ১৮% জৈব কার্বন,১৫-২৫% পানি
ও সামান্য পরিমাণ হরমোন রয়েছে।
 
গাছ লাগানোর পূর্বেই মাটি প্রস্তুত করার সময় একটি ২০ ইঞ্চি টবের ক্ষেত্রে মাটির তিন ভাগের এক ভাগ কেঁচো সার একত্রে মিশাতে হবে । গাছ লাগানোর ৪/৫ মাস পর থেকে গাছ প্রতি ২০০ গ্রাম ভার্মি কম্পোষ্ট সার ২ মাস অন্তর অন্তর গাছের গোড়ায় মাটি খুচিয়ে প্রয়োগ করুন ।
 
শহরে অবস্থানের কারণে যাদের গোবর সার সংগ্রহে সমস্যা আছে তাদের জন্য কেঁচো সার আশির্বাদ বলা চলে । কারণ গোবর সারের পরিবর্তে মাটির সংগে শুধুমাত্র কেঁচো সার প্রয়োগ করেও যে কোন গাছ লাগানো যায় । ভার্মিকম্পোষ্ট সার ব্যাবহার করা সহজ, যে কারণে ছাদে বাগানের জন্য উক্ত সার ব্যবহার করতে পারেন ।
 
কেঁচো সার ব্যবহারের উপকারিতাঃ-
কেঁচো সার ব্যবহার করলে ফসলের উৎপাদন ও গুণাগুণ বৃদ্ধি পায় এবং চাষের খরচ কম হয়। উৎপাদিত ফসলের বর্ণ,স্বাদ, গন্ধ হয় আকর্ষণীয়। ভার্মি কম্পোষ্ট´ বা কেঁচো সারে মাটির পানি ধারণ করার
ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং বায়ু চলাচল বৃদ্ধি পায়। ফলে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে। আর মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ায় বিধায় কেঁচো সার ব্যবহারে সেচের পানি কম লাগে। ক্ষারীয় লবণাক্ত মাটিতেও চাষাবাদ সম্ভব। রোগ ও পোকামাকড়ের উপদ্রব কম হয়। জমিতে আগাছার ঝামেলা কম হয়। ফসলের বীজের অংকুরোদগম ক্ষমতা বাড়ে। অধিক কুশি, ছড়া ও দানা গঠন হয়। মাটির বুনট উন্নত হয়। রাসায়নিক সারের চাইতে খরচ অনেক কম হয় এবং পরিবেশ দূষণমুক্ত থাকে।

Tags:

We will be happy to hear your thoughts

Leave a reply

Garden.com.bd
Logo
Register New Account
Compare items
  • Cameras (0)
  • Phones (0)
Compare